হিন্দু শব্দের ইতি কথা। The Hindu word is spoken.
মহাপুরুষদিগের শাষনবাক্য-সমূহই শাস্ত্র নামে খ্যাত। শাস্ত্র দ্বিবিধ, যথা- ধর্মশাস্ত্র ও ধর্ম্মেতরশাস্ত্র। ধর্মশাস্ত্র যথা - বেদ, স্মৃতি, পুরাণ, তন্ত্র, ভক্তি সূত্র, তওতা, বাইবেল, কোরান শরিফ প্রভৃতি। ধর্মের শাস্ত্র - বিজ্ঞান, গনিত, জ্যোতিষ, সাহিত্য, ব্যাকারণ, শিক্ষা, অল্প, নিরক্ষর, ভূগোল, ইতিহাস, উদ্ভিদবিদ্যা, রাসায়ন প্রভৃতি। এই প্রবন্ধে আমরা ধর্মশাস্ত্র-সংক্রান্ত কতিপয় বিষয় মাত্র বর্ণনা করিব।
ধর্মশাস্ত্র বর্ণনা করিতে হইলে, পৃথিবীতে প্রধানতঃ কোন্ কোন্ ধর্ম্ম প্রচলিত, অগ্রে তাহার উল্লেখ আবশ্যক। আজকাল ভারতের ধর্ম্ম হিন্দুধর্ম নামে খ্যাত, কিন্তু হিন্দু এই নামটি সংস্কৃত-মূলক নহে, উহাপারস্যভাষার শব্দ। কোনও কোনও পণ্ডিত বলেন যে –
“ইংরেজ নব ষট্ পঞ্চ লন্ড্রদেশসমুদ্ভাবঃ।
হিন্দুধর্ম্ম-প্রলুপ্তয়ে ভবন্তি চক্রবর্ত্তিনঃ।।”
ভবিষ্যপুরাণ।
“ হিমবদ্ বিন্দুসরসো মর্ধ্যো হিন্দুঃ প্রকীর্ত্তিতঃ।।”
ইত্যাদিস্থলে হিন্দু শব্দের যখন উল্লেখ দৃষ্টি হয়, তখন হিন্দুশব্দ যে সংস্কৃতশব্দ তাহাতে সন্দেহ করা উচিত নহে। কিন্তু অধিকাংশ চিন্তাশীল মনস্বিবর্গ উহা স্বীকার করেন না। তাঁহারা বলেন যে, ঐ সকল সংস্কৃত শ্লোক অথবা ঐ সকল গ্রন্থ ‘হিন্দু’ নাম প্রচারের পরে লিখিত হইয়াছে। কারন (প্রথমতঃ) ঐ সকল গ্রন্থে যে ফিরিঙ্গি ভাষায় লিখিত মন্ত্রের উল্লেখ আছে, তাহা সম্পূর্ণ অলীক। একারণ জানা যাইতেছে যে, ঐ সকল শ্লোক বা ঐ সকল গ্রন্থ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি কর্তৃক লিখিত হয় নাই, এজন্য উহা প্রমাণরূপে গৃহীত হইতে পারে না। (দ্বিতীয়তঃ) ‘হিন্দু’ শব্দ যদি সংস্কৃত শব্দ হইত তবে বেদ, মন্বাদি স্মৃতি, রামায়ণ ও মহাভারতের কোনও না কোনও স্থলে উহার উল্লেখ থাকিত। (তৃতীয়তঃ) যে সকল স্থলে ‘আর্য্য’ নাম লিখিত হইয়াছে, তাহার কোনও না কোনও স্থলে নিশ্চয়ই ‘হিন্দু’ নাম দেখা যাইত। (চতুর্থতঃ) ‘হিন্দু’ শব্দ যে যে গ্রন্থে আছে, তাহা প্রামানিক হইলে, তাহা হইতে অবশ্যই অন্যত্র বচন উদ্ধৃত হইত। ইত্যাদি-ইত্যাদি কারণে ‘হিন্দু’ শব্দ যে সংস্কৃত শব্দ নহে, তাহা স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হইতেছে।
তবে এই ভারত-প্রচালিত ‘হিন্দু’ শব্দের উৎপত্তি কিরূপে হইল ?
ইহার উত্তরে যে যাহা বলেন, তাহা নিম্নে লিখিত হইল। ইতিহাসবিদ্ দীগের মতে পূর্বকালে সিন্ধুনদের পূর্ব পূর্ব্ব প্রদেশ হিন্দুস্থান সিন্ধু প্রদেশ বলিয়া বিদেশী য়ে যা নির্দ্দেশ করিতেন। ‘সিন্ধু’ শব্দ পারস্য ভাষায় হিন্দু, গ্রীকভাষায় ইন্দুর এবং তদনুসারে ল্যাটিন ভাষায় বিকৃত হইয়া ইণ্ডিয়া হইয়াছে। ইংরেজেরা অদ্যাপি শেষোক্ত নাম ব্যবহার করিয়া থাকেন। এইরূপে ভারতবর্ষীয়েরা বিদেশী য়াত কর্ত্তৃক হিন্দুস্থানী, হিন্দুস্থানী এবং অতি সংক্ষেপে হিন্দু বলিয়া কীর্ত্তিত হইয়াছেন। ঐতিহাসিক দিগের এমতে ‘হিন্দু’ নাম ভারতবাসী দিগের কোনও রূপ গ্লানি নাই। কিন্তু ভাষাজ্ঞদিগের মতে ‘হিন্দু’ নাম ভারতীয় দিগের মহাগ্লানিজনক। নিম্নে তদ্বিবরণ বর্ণিত হইতেছে।
পারস্য ভাষায় হিন্দু-শব্দে কৃষ্ণবর্ণ বুঝায়। পূর্ব্বে পারস্য বাসীরা আফ্রিকা হইতেই অধিকাংশ ক্রীতদাস আনয়ন করিতেন। উহার কৃষ্ণবর্ণ বলিয়া পরসীকেরা ক্রীতদাস বা দাস অর্থে হিন্দুশব্দ ব্যবহার করিতেন, মুসলমানেরা ভারতজয়ের পরে আর্য্যদিগের প্রতি ঘৃণা-প্রদর্শনার্থে তাহাদিগকে হিন্দু নামে অভিহিত করিয়াছিলেন, বোধ হয়।
(১) হিন্দু শব্দের এইরূপে উৎপত্তি স্বীকার করিলে, উহা যে ভারতবাসীর অতিশয় গ্লানি-সূচক শব্দ তাহাতে আর সন্দেহ নাই। তবে “গুড ফ্রাইডে” নামের ন্যায় উহাও কালে ভারতবাসীর কর্তৃক পরিগৃহীত হইয়াছে। মহাত্মা খৃষ্টের মৃত্যু-দিন লক্ষ করিয়া য়িহুদীরা খৃষ্টের মৃত্যুর দিন জগতের উৎপাতের অন্তর্দ্ধান-নিবন্ধন “উত্তম শুক্রবার” শব্দের বাচ্য হইয়াছিল। তখন য়িহুদী জাতিই প্রবল, এজন্য ঐ নাম (গুড্ ফ্রাইডে নাম) সর্বত্র বিখ্যাত হইল। খৃষ্টানেরা দেখিলেন যে ও নাম আর ফিরাইবার উপায় নাই। এজন্য তাহারাও ঐ দিনকে “গুড ফ্রাইডে” বলিতে লাগিলেন। কিন্তু অন্যবিধ কারণের উল্লেখ করিলেন। তাহারা বলিলেন যে, ঐ দিনে প্রভু জগতের পাপ-গ্রহণপূর্বক দেহত্যাগ করিয়াছেন, অতএব উহা “গুড্ ফ্রাইডে” অর্থাৎ “উত্তম শুক্রবার”। এস্থলে পাঠকেরা জানিবেন যে, খৃষ্ট শুক্রবারে দেহত্যাগ করিয়াছিলেন। এইরূপ কারণ বশতঃই ভারতবর্ষীরেরাও 'হিন্দু' নামে পরিচিত দিতে লজ্জা-বোধ করেন না। কারন মুসলমান রাজত্বে ঐ নাম এত প্রচলিত হইয়াছিল যে উহার অন্যথা করার সাধ্য ছিল না। এজন্য ভারতবর্ষীয় পণ্ডিতেরা-
“হীনঞ্চ দূষয়ত্যেব হিন্দু রিত্যুচ্যতে প্রিয়ে”
“হীনঞ্চ দূষয়ত্যেব হিন্দু রিত্যুচ্যতে প্রিয়ে”
“হিমবদ্-বিন্দুসরসোর্মধ্যো হিন্দুঃ প্রকীর্ত্তিতঃ”,
এবং “সিন্ধুশব্দা পভ্রষ্টত্বাৎ ম্লেচ্ছৈঃ হিন্দু রুদীরিত।”
ইত্যাদি বচন-রচনা দ্বারা আপনাদিগের গৌরব রক্ষা করিয়াছেন।
ধর্ম বিষয়ে প্রকৃতার্থের জন্য আমাদের youtube channel SatyaDharma subscribe করবেন।
(১) হিন্দু শব্দের কৃষ্ণবর্ণ অর্থের প্রমাণ--
(ক) হিন্দুকোশ, হিন্দুকোহ বা কৃর্ষ্ণপর্বত।
(খ) পারস্য কবি হাপেজ স্বীয়গ্রন্থে লিখিয়াছেন যে, -
অগর আঁন্ তুর্কশিরাজী বদস্ত্তয়দ্ দিলে মারা।
বখালে হিন্দোয়েম বকষম্ সমরকন্দো বোখরারা।।
অর্থাৎ সিরাজনগর নিবাসিনী সেই সুন্দরী যদি আমাকে ভালবাসে, তবে তাহার গণ্ডস্থিত কৃষ্ণবর্ণ তিলের পরিবর্তে আমি তাহাকে সমরকন্দ ও বোখারা নগরদ্বয় দান করিব।।
(খ) পারস্য কবি হাপেজ স্বীয়গ্রন্থে লিখিয়াছেন যে, -
অগর আঁন্ তুর্কশিরাজী বদস্ত্তয়দ্ দিলে মারা।
বখালে হিন্দোয়েম বকষম্ সমরকন্দো বোখরারা।।
অর্থাৎ সিরাজনগর নিবাসিনী সেই সুন্দরী যদি আমাকে ভালবাসে, তবে তাহার গণ্ডস্থিত কৃষ্ণবর্ণ তিলের পরিবর্তে আমি তাহাকে সমরকন্দ ও বোখারা নগরদ্বয় দান করিব।।
1 Comments
CASINO VEGAS – JULY 15, 2021 - JTG Hub
ReplyDeleteCASINO VEGAS – JULY 15, 제천 출장안마 2021 – 경주 출장샵 JTG Hub. CASINO VEGAS – JULY 15, 통영 출장안마 2021. JTG 안동 출장마사지 Hub. CASINO VEGAS. JTG Hub. 광주광역 출장마사지 CASINO VEGAS. JTG Hub.